আজ বুধবার (২ মার্চ) জাতীয় ভোটার দিবস। দেশে চতুর্থবারের মতো পালিত হচ্ছে এই দিবসটি। এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, রক্ষা করবো ভোটাধিকার’। এ উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।

ভোটার দিবসটি পালনের মধ্য দিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশনের হাতে প্রথম আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি পালিত হতে যাচ্ছে। ভোটার দিবসে তিন কর্মকর্তাকে জাতীয় নির্বাচনী পদক দেওয়া হবে।
এদিকে ভোটার দিবস পালনের পাশাপাশি বুধবার হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হতে যাচ্ছে। হালনাগাদ শেষে দেশে ভোটারসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৩২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৫১ জন।

এর মধ্যে নতুন করে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ১৫ লাখ ৭১ হাজার ১০০ জন ভোটার। ২০২১ সালের ২ মার্চ দেশের ভোটারসংখ্যা ছিল ১১ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার ৬৬৯ জন। আর চলতি বছরের ১ মার্চ পর্যন্ত ইসির সার্ভারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ১৫ লাখ ৭১ হাজার ১০০ জন। সেই হিসাবে বর্তমানে ইসির সার্ভারে ১১ কোটি ৩২ লাখ ৯১ হাজার ৭৬৯ জন নাগরিকের তথ্য রয়েছে। তবে তাদের মধ্যে আঙুলের ছাপ দিয়ে ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেননি ৩৩ হাজার ৪১৮ জন। অর্থাৎ দেশের মোট ভোটারসংখ্যা ১১ কোটি ৩২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৫১ জন।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসির সার্ভারে সংরক্ষিত তথ্যের মধ্যে নারীর সংখ্যা পাঁচ কোটি ৫৫ লাখ ৯৮ হাজার ২৯৬ জন। আর পুরুষ পাঁচ কোটি ৭৬ লাখ ৯৩ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের রয়েছেন ৪৫৪ জন। সবচেয়ে বেশি তথ্য রয়েছে ঢাকা অঞ্চলের। এ অঞ্চলের মোট এক কোটি ৬৮ লাখ ৯১ হাজার ৫৫৭ জনের তথ্য রয়েছে ইসির কাছে। সবচেয়ে কম রয়েছে ফরিদপুর অঞ্চলে, ৫৩ লাখ ৯১ হাজার ২০৯ জন।

ভোটার তালিকা আইন অনুযায়ী, প্রতিবছর ২ মার্চ হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অবশ্য তালিকা প্রকাশ হলেও এবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়নি। সদ্য বিদায়ী কে এম নূরুল হুদা কমিশনের সময় ২০১৯ সালের পর তথ্য সংগ্রহ করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ হয়নি। যেসব আগ্রহী নাগরিক নিজের উদ্যোগে অনলাইনে কিংবা ইসির মাঠ প্রশাসন কার্যালয়ে গিয়ে ভোটার নিবন্ধন করেছে, সেগুলোই এই হালনাগাদে স্থান পাচ্ছে।

ভোটার দিবস উপলক্ষে বুধবার সকাল ৮টায় রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে একটি শোভাযাত্রা হবে। এটি শেষ হবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে গিয়ে। পরে বিকেল ৩টায় আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বিশেষ অতিথি হিসেবে চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থাকবেন।

ভোটার দিবসের অনুষ্ঠানে নতুন ভোটারদের কাছে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। জাতীয় নির্বাচনী পদকের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত তিন কর্মকর্তা হলেন- রাজশাহীর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম, ঢাকার জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান ও ঝালকাঠি সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শারমীন আফরোজ।

২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘গণতন্ত্র, নির্বাচন ও ভোটাধিকার বিষয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে’ প্রতিবছরের ১ মার্চকে জাতীয় ভোটার দিবস হিসেবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সরকার। এক বছর এ দিনে ভোটার দিবস পালনের পর তারিখ পরিবর্তন করে ২ মার্চ করা হয়। জাতীয় ভোটার দিবস ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত একটি দিবস। প্রমোশন ক্যাম্পেইন সংক্রান্ত দিবসগুলো ‘খ’ শ্রেণিতে থাকে।

 

কলমকথা/ বিথী